‘মালবাজারকাণ্ডে কারও দোষ প্রমাণ হলে কড়া ব্যবস্থা’, আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর

মালবাজারে বিজয়া দশমীর বিসর্জনে গিয়ে হড়পা বানে মৃতদের পরিবারের হাতে সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি দুর্ঘটনার দিন যারা নিজেদের প্রাণ তুচ্ছ করে কয়েকশো মানুষের জীবন বাঁচিয়েছিলেন সেই মসিহাদেরও পুরস্কৃত করেছেন। উদ্ধারকারী ৭ যুবকের হাতে এক লক্ষ টাকার চেক ও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সাহসিকতার শংসাপত্র প্রদান করেন। সেই সঙ্গে তাঁদের সরকারি চাকরিরও প্রস্তাব দিয়েছেন। একই সঙ্গে দুর্ঘটনার পিছনে কারও দোষ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, নদীতে জল বাড়ল, সে বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে। কারও দোষ প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ গত ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিন মালবাজারের মাল নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দিতে গিয়ে হড়পা বানে তলিয়ে গিয়ে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছিল স্থানীয় আট বাসিন্দার। দুর্ঘটনার পরেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারের হাতে ২ লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হয়েছিল। আহতদের দেওয়া হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা করে। সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে মালবাজার কাণ্ডে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে মহম্মদ মানিক সহ স্থানীয় যারা দুর্ঘটনার দিন বহু মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন তাঁদের ভূমিকারও ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। মঙ্গলবারের প্রশাসনিক বৈঠকে মৃতদের পরিজনদের হাজির থাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। প্রশাসনিক বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মালবাজারে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে তাঁর দেখা করা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ‘বিরোধীদের দের বলুন নিজের চরকায় তেল দিতে। আমাদের নিয়ে ভাববার দরকার নেই। রাজ্য সরকার উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বংলার মানুষের পাশে আছে। বিরোধীরা কুৎসামূলক অপপ্রচার চালাচ্ছে।’ টেট উত্তীর্ণদের আন্দোলন প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই সব নিয়ে আমি এখন আলোচনা করছি না। ওটা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। এটা এখন বিচারাধীন বিষয়। কিছু জানতে চাইলে আদালতে গিয়ে জিজ্ঞেস করো।’ বালিগঞ্জের বিধায়ক তথা মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের একাংশের পোস্ট নিয়ে বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসে এ, বি, সি, ডি বলে কোনও গ্রেড নেই। কোনও বিভাজন নেই। এখানে সব সমান। আমরা সবাই এক।’
আজ বুধবার উত্তরবঙ্গ সফরের তৃতীয় দিনে নিউ জলপাইগুড়ির কাউয়াখালি মাঠে দলের বিজয়া সম্মিলনীতে যোগ দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ফিরবেন কলকাতায়।