‘জন গণ মন’ এবং ‘বন্দে মাতরম’ একই স্তরে দাঁড়িয়ে আছে: দিল্লি হাইকোর্টকে কেন্দ্র

নয়াদিল্লি ৫ নভেম্বর: ‘জন গণ মন’-এর সঙ্গে ‘বন্দে মাতরম’-এর সমান মর্যাদার আবেদনের জবাবে কেন্দ্র দিল্লি হাইকোর্টকে বলেছে যে উভয়ই একই স্তরে দাঁড়িয়েছে এবং দেশের প্রতিটি নাগরিকের উভয়ের প্রতি সমান সম্মান দেখানো উচিত।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আদালতে এক হলফ নামা জমা দিয়ে বলেছে ” ভারতের মানুষের আবেগ এবং মানসিকতায় ‘জন গণ মন’ জাতীয় সঙ্গীত,’বন্দে মাতরম একটি অনন্য গীত যা মানুষের মনে বিশেষ স্থান দখল করে আছে।”
মন্ত্রক আরও উল্লেখ করেছে যে ১৯৫০ সালে,২৪ জানুয়ারি, ভারতের গণপরিষদের রাষ্ট্রপতি ‘জন গণ মন’কে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন।ভারতের জাতীয় সঙ্গীত সম্পর্কিত আদেশ’ জারি করে বলা হয়েছিল যে বিশেষ পদ্ধতি এবং পরিস্থিতিতে জাতীয় সঙ্গীত বাজানো বা গাইতে হবে।
উল্লেখ্য,বিজেপি নেতা ও আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় “বন্দেমাতরম” সম্পর্কে নির্দেশনা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।তার দাবি, “বন্দেমাতরম” এমন একটি কবিতা যেটি স্বাধীনতা সংগ্রামে ঐতিহাসিক ভূমিকা নিয়েছিল। জন গণ মন”-র সঙ্গে তাকেও একই আসনে বসানো হোক সমান সম্মান জানানো হোক । প্রতিটি কাজের দিনে স্কুল ও সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেন “জনগণমন”-র সঙ্গে “বন্দেমাতরম” গানও গাওয়া হোক। এই দাবিতে কেন্দ্র ও দিল্লির সরকারের কাছে আবেদন রেখেছেন অশ্বিনী উপাধ্যায়।এ ব্যাপারে তিনি আদালতেরও দ্বারস্থ হন।
তার আবেদনে বলা হয়েছে, “বন্দেমাতরম” আমাদের ইতিহাসের প্রতীক। সার্বভৌমত্ব, ঐক্য ও অহঙ্কার। দেশের নাগরিক হয়ে কেউ যদি এই গানকে প্রকাশ্যে অথবা গোপনে অসম্মান করে তবে তা শুধু অসামাজিক কার্যকলাপ হিসেবে বিবেচিত হবে তাই নয়। এমনকী, এটি একটি সার্বভৌম জাতির নাগরিক হিসেবে আমাদের সমস্ত অধিকার ও অস্তিত্বকে ধ্বংস করে দেবে। তাই দেশের প্রতিটি নাগরিককে এই ধরনের কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকতে হবে। পাশাপাশি যদি এমন কোনও কাজ কেউ করতে উদ্যত হয় তাকে আটকানোর দায়িত্বও দেশের নাগরিকের।জাতি হিসেবে আমাদের গর্বিত হওয়া উচিত। আমাদের সংবিধান, জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা নিয়ে গর্বিত হতে হবে। জাতীয় স্বার্থকে ব্যক্তি স্বার্থের উপরে রাখতে হবে। তাহলেই আমরা আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে পারব। “বন্দেমাতরমে” প্রচারণার জন্য জাতীয় নীতি তৈরির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।”
এর আগে সুপ্রীম কোর্ট এ ব্যাপারে জানিয়েছিল,সংবিধান অনুসারে ভারতের প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হবে-(ক) সংবিধান মেনে চলা এবং এর আদর্শ ও প্রতিষ্ঠান, জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সঙ্গীতকে সম্মান করা। সুতরাং, জাতীয় গানের বিষয়ে আমরা কোনও বিতর্কে প্রবেশ করতে চাই না।”