নয়াদিল্লি ১৫ডিসেম্বর: সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার পশ্চিম বর্ধমান জেলায় একটি কম্বল বিতরণ কর্মসূচিতে পদদলিত হওয়ার ঘটনায় বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং অন্যদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি আবেদন গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিমার সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চকে রাজ্য সরকারের পক্ষে উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবী এএম সিংভি বলেন, তিনি মামলায় এফআইআর করার উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার জন্য হাইকোর্টের আদেশের পরিবর্তন চাইছেন।
সিংভি আরও বলেন,হাইকোর্টের বিচারক যিনি আদেশটি দিয়েছেন তিনি অনুপলব্ধ ছিলেন এবং তাই, আদেশের পরিবর্তনের জন্য শীর্ষ আদালতে একটি আপিল দায়ের করা হয়েছে।
এই পর্যায়ে আবেদনটি গ্রহণ করতে অস্বীকার করে, বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে তার পরিবর্তনের আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে যেতে বলেছে। এর ফলে রাজ্য সরকার তার আবেদন প্রত্যাহার করে নেয়।
পুলিশের মতে, বুধবার পশ্চিম বর্ধমান জেলায় কম্বল বিতরণ কর্মসূচিতে পদদলিত হয়ে তিনজন নিহত এবং পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
এদিকে আসানসোলে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় দায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপর চাপালেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। একইসঙ্গে বিরোধী দলনেতার বেপরোয়া মনোভাবের জন্য বিচারপতি রাজশেখর মান্থার দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন তিনি। খোঁচা দিলেন ১৪ ডিসেম্বর ডেডলাইন নিয়েও। সবমিলিয়ে আসানসোলের কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘিরে অস্বস্তিতে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারির দাবি, সভার বিষয় পুলিশকে জানানো হয়েছিল।
আসানসোলের পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে তৃণমূলের মুখপাত্রর অভিযোগ, পুলিশের অনুমতি ছাড়া সভার আয়োজন করেছিলেন শুভেন্দু। পুলিশ থাকলে এধরনের ঘটনা হয়তো ঘটত না, মত তৃণমূল মুখপাত্রের। তাঁর কথায়, “কম্বল দেওয়ার নাম করে গরিব মানুষদের ডেকে আনা হয়েছিল। সেখানে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে নিরাপরাধ তিনজনের। এর দায় সম্পূর্ণভাবে শুভেন্দুর।”
শুভেন্দু অধিকারীর বেপরোয়া মনোভাব, পুলিশকে অগ্রাহ্য় করার প্রবণতার জন্য বিচারপতি রাজশেখর মান্থার দিকেও আঙুল তুলেছেন তৃণমূল নেতা। তাঁর কথায়, “শুভেন্দুকে এমন আইন ভাঙার, আইনশৃঙ্খলা নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকারটা কে দিচ্ছে? ওর বিরুদ্ধে এফআইআর করা যাবে না, কে বলছে? বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। ওকে (শুভেন্দু) রক্ষাকবচ দিয়ে রেখেছেন। সে তো নিজে ভাবছে যা ইচ্ছে করব। তাই পুলিশকে না জানিয়ে এত বড় সভার আয়োজন করছে। মৃত্যুর জন্য দায়ী কে? শুভেন্দু, বিজেপি নাকি রক্ষাকবচের পর রক্ষাকবচ দিয়ে শুভেন্দুর মধ্যে এই বেপরোয়া ভাব তৈরি করা রাজাশেখর মান্থা? তাঁকেই বা কেন দায়ী করা হবে না, সেটা ভেবে দেখা দরকার।”
