নিজস্ব প্রতিবেদক: তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মতো কোনও মুখ নেই বঙ্গ বিজেপিতে। তাই আগামী ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে দলের বৈতরণী পার হতে ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেই মুখ করার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। আগামী ১৫ মাসে তাঁকে দিয়ে অন্তত ১৪টি সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডারা। বিধানসভা ভোটে সংখ্যালঘু এলাকায় কোনও সভা করেননি প্রধানমন্ত্রী। এবার আর সেই ভুল করতে চাইছে না বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। ১৪টি সভার অন্তত তিনটি সভা যাতে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় করা যায়, তার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
গত লোকসভা ভোটে রাজ্য থেকে ১৮ আসন গিয়েছিল বিজেপির ঝুলিতে। যদিও আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র পদত্যাগের পরে উপনির্বাচনে ওই আসন হাতছাড়া হয়েছে পদ্ম শিবিরের। ব্যারাকপুরের সাংসদ ফিরে গিয়েছেন তৃণমূলে। ফলে সাংসদ সংক্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৬-তে। ইতিমধ্যে দফাওয়ারি যে অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা চালিয়েছেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাতে সাত থেকে আটটির বেশি আসন দলের পক্ষে নিরাপদ নয়। সময় যত গড়াবে ততই ওই নিরাপদ আসন আদৌ নিশ্চিত নাও থাকতে পারে। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে নতুন বছর থেকেই বঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা রাজ্যে ১২টি করে ২৪টি সভা করবেন। প্রতি মাসেই পালা করে আসবেন তাঁরা। আগামী ৭ জানুয়ারি রাজ্যে আসছেন বিজেপি সভাপতি। সাংগঠনিক বৈঠকের পাশাপাশি হুগলির চণ্ডীতলায় তাঁর সভা করার কথা। কিন্তু অমিত কিংবা শাহ কেউই তেমন ক্রাউড পুলার নয়। সাধারণ মানুষকে আকর্ষণ করার মতো ক্ষমতা নেই দুই নেতার। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ক্রাউড পুলার হিসেবে পরিচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ থেকে তিনটি লোকসভা আসন নিয়ে একটা করে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রথম ক্ষেত্রে দক্ষিণবঙ্গের জেলাতে সভা করবেন। মাঝে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও মালদায় সভা করার কথা তাঁর। শেষের দিকে ফের দক্ষিণবঙ্গে সভা করবেন। মূলত যে সব আসনকে টার্গেট করে ঝাঁপানো হবে সেই আসনগুলিতেই সভা করবেন। মোদি-নাড্ডা-শাহ–এই ত্রয়ী মোট ৩৮টি সভা করবেন বলে ঠিক হয়েছে। পরে সভার সংখ্যা বাড়তেও পারে। কার্যত প্রচারে ঝড় তুলে দলের হারানো জমি কিছুটা ফেরাতে চাইছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।
