নিজস্ব প্রতিনিধি: বিধানসভায় নীল বাড়ি দখলের স্বপ্ন মুখ থুবড়ে পড়ার পরেই ছন্নছাড়া দশা বঙ্গ বিজেপির। উল্টে দলে গোষ্ঠীবাজির মতো মারণব্যধি উপরতলা থেকে নিচুতলায় কর্কট রোগের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। নেতাদের খেয়োখেয়িতে তিতিবিরক্ত হয়ে নিস্ক্রিয় হয়ে রয়েছেন নিচুতলার কর্মী-সমর্থকরা। পঞ্চায়েত ভোটে সব আসনে প্রার্থী দেওয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে গ্রাম বাংলা দখলের ভোটযুদ্ধে পায়ের তলায় শক্ত ভিত খুঁজতে ফের রথযাত্রার সিদ্ধান্ত নিলেন সুকান্ত মজুমদার-শুভেন্দু অধিকারীরা। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই রাজ্যের ছয় প্রান্ত থেকে ছয়টি রথ বের করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নাহলে নিদেনপক্ষে যাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ওই রথযাত্রার উদ্বোধন করেন সেই চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যদিও রথযাত্রা করে পঞ্চায়েত ভোটে মুখরক্ষার মতো ফল করা যাবে কিনা, তা নিয়ে বঙ্গ বিজেপির অধিকাংশ নেতাই সন্দিহান।
দলকে ঘুরে দাঁড় করানোর ক্ষেত্রে রথযাত্রা বঙ্গ বিজেপিতে নতুন কিছু নয়। রাহুল সিনহা রাজ্য সভাপতি থাকাকালীন রথযাত্রা করা হয়েছিল। গত লোকসভা ভোটে ফের রাজ্যে রথ বের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। যদিও অনুমতি না মেলায় সেই পরিকল্পনা থেকে পিছু হঠতে হয়েছিল। গত বছর বিধানসভা ভোটের আগে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার নামে রথযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। ৬ ফেব্রুয়ারি নবদ্বীপ থেকে সেই রথের সূচনা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। কিন্তু তাতে যে রাজনৈতিক ডিভিডেন্ড তোলা যায়নি বিধানসভা ভোটের ফলাফলেই তা স্পষ্ট।
বৃহস্পতিবার রাতে পঞ্চায়েত ভোটের রণকৌশল ঠিক করতে বৈঠকে বসেছিল বঙ্গ বিজেপির কোর কমিটি। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেখে ছয়টি রথ বের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে সব লোকসভা আসনে দলের সাংগঠনিক শক্তি রয়েছে সেই সব জায়গাতেই ওও রথ ঘোরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৪২টি আসনের মধ্যে মাত্র ৩১টি লোকসভা আসনে ওই রথ ঘুরবে বলে ঠিক হয়েছে। তার মধ্যে উত্তরবঙ্গের আট, জঙ্গলমহলের পাঁচ আসন রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় হিন্দুত্বের ভাবাবেগে সুড়সুড়ি দেওয়ার লক্ষ নিয়েই রথযাত্রা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতারা। যদিও এ বিষয়ে এই মুহুর্তে স্পষ্ট করে কিছু জানাতে চাননি বঙ্গ বিজেপির মুখিয়া সুকান্ত মজুমদার।
