নিজস্ব প্রতিবেদক: অপেক্ষার অবসান। বুধবার থেকে রাজ্যজুড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হল তৃণমূল কংগ্রেসের নয়া রাজনৈতিক কর্মসূচি ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’। আর পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিবিড় জনসংযোগের নয়া কর্মসূচি শুরুর দিনেই এক ভিডিও বার্তায় ‘দিদির দূত’ অ্যাপ ডাউনলোড করার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘দিদির দূত’ অ্যাপ ডাউনলোড করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্মার্টফোনকে অস্ত্র করে তুলুন। দিদির উন্নয়নের কাজের বার্তাবাহক হিসেবে দিদির দূত অ্যাপ ডাউনলোড করুন৷ এর মাধ্যমে সরাসরি আপনারা আপনাদের মতামত জানাতে পারবেন দিদিকে। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের যে কোনও অনুষ্ঠানের লাইভ স্ট্রিমিং দেখা যাবে। তার ঘোষণা করা যে কোনও সরকারি কর্মসূচি সংক্রান্ত তথ্যও জানতে পারবেন। যে বিপুল কাজ হয়েছে তা যেন আপনাদের এলাকায় ত্বরাম্বিত হয় ও অব্যাহত থাকে তা দেখুন।’
গত ২ জানুয়ারি নজরুল মঞ্চের সভা থেকেই ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ নামে নয়া রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি। ১১ জানুয়ারি থেকে দলের সাংসদ-বিধায়ক, জেলা সভাপতি, জেলা চেয়ারম্যান সহ ৩২০ জনের এক দল মানুষের দরজায়-দরজায় পৌঁছে যাবেন, মানুষের বাড়িতে মধ্যাহ্ন কিংবা নৈশভোজ সারার সঙ্গে সঙ্গে অভাব-অভিযোগ শুনবেন বলেও ঘোষণা করেন। সাংসদ-বিধায়ক-জেলা সভাপতি-জেলা চেয়ারম্যানদের অন্তত ১০ দিন করে গ্রামে রাত্রিবাস করতে হবে বলে জানান তিনি। সাংসদ-বিধায়ক সহ দলীয় পদাধিকারীরা ঘুরে আসার পরে সাধারণ মানুষের দরজায় হাজির হবেন দিদির দূত। বিশাল এই কর্মযজ্ঞে সামিল হচ্ছেন প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ তৃণমূল কংগ্রেস স্বেচ্ছাসেবক। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মূলত পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের দুর্নীতিগ্রস্ত পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব দলের ধাক্কা খাওয়া ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে চাইছেন। দুর্নীতিগ্রস্থদের দল থেকে তাড়ালে কিংবা কঠোর ব্যবস্থা নিলে গ্রাম বাংলার ভোটে দুর্নীতিকে বড় হাতিয়ার করতে পারবে না বিরোধী শিবির।
এদিন রাজ্যের ছয় জেলায় ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় মুর্শিদাবাদের ১০টি, হুগলির আটটি, হাওড়ার আটটি, পূর্ব মেদিনীপুরের সাতটি, নদিয়ার পাঁচটি ও পূর্ব বর্ধমানের চারটি জায়গা মিলিয়ে মোট ৪৪টি স্থানে শাসকদলের ৪৪ জন নেতা জনতার দরবারে হাজির হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে মহুয়া মৈত্র সহ তিন জন সাংসদ এবং সৌমেন মহাপাত্র, ইমানি বিশ্বাস, আমিরুল ইসলাম, শাঁওনি সিংহ রায় সহ ১৮ জন বিধায়ক ছিলেন। সাধারণ মানুষের কথা শোনার পাশাপাশি অনেকে মধ্যাহ্নভোজও সারেন। শাসকদলের প্রথম সারির নেতা-বিধায়ককে কাছে পেয়ে অনেকেই যেমন ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন, তেমনই অনেকে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন।
