বিধানসভা ভোটমুখী মেঘালয়ে দাঁড়িয়ে ফের কংগ্রেস ও বিজেপিকে একই বন্ধনীতে ফেলে আক্রমণ শানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তুরার মেন্দিপাথারে দলীয় সভায় ভোটারদের কংগ্রেস সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিজেপিকে যদি কেউ হারাতে পারে তবে সেটা তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি ও এনপিপির শাসন থেকে মুক্তি পেতে যদি এখানকার মানুষ ভেবে থাকেন কংগ্রেসকে ভোট দেবেন তবে এই ভাবনা ভুল। কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার অর্থ ঘুরিয়ে বিজেপিকে ভোট দেওয়া। কংগ্রেসকে একটা ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া।’ পাশাপাশি কনরাড সাংমার নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারকেও তুলোধনা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এদিনই ঘোষণা করা হয়েছে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ৬০ আসন বিশিষ্ট মেঘালয় বিধানসভায় ভোট নেওয়া হবে। ২ মার্চ ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হবে। নির্বাচন কমিশনের ভোট নির্ঘন্ট ঘোষণার আগেই অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাজ্যের ৫২টি আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। এদিন নির্বাচন কমিশনের ভোট নির্ঘন্ট ঘোষণার আগেই তুরায় দলীয় জনসভায় কার্যত নির্বাচনী প্রচারের বাদ্যি বাজান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আজ ১৮ জানুয়ারি ১৫ দিন আগে এই জনসভার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আর আজই নির্বাচন কমিশনের তরফে মেঘালয়ের নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করার কথা। আর আজ এই অনুষ্ঠান থেকেই এনপিপি ও দুর্নীতিগ্রস্ত এনডিএ সরকারের শেষের শুরু।’ মেঘের রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা ভোটে বিজেপি ও তার জোটসঙ্গী দল কোনও আসন পাবে না বলে দাবি করে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি আবার বলছি এই গারো পাহাড়ে বিজেপি-এনপিপি শূন্য পাবে৷ এখান থেকে একটাও বিধানসভা আসন পাবে না। আগামী ৫০ দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমাদের কাছে। ৪৫ দিনে ভোট শেষ হবে৷ আমি আপনাদের কাছে আবেদন করছি, এই সময় আপনার আমার সাথে থাকুন।’
রাজ্যের বিজেপি ও এনপিপি জোট সরকারের সমালোচনা করে অভিষেক বলেন, ‘গত ৫ বছরে মেঘালয়ে কোনও উন্নয়ন করেনি বিজেপি ও এনপিপির সরকার। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উন্নয়ন সমস্ত দিক থেকে মেঘালয় পিছিয়েছে। শুধু সাধারণ মানুষকে লুঠ করেছে ডবল ইঞ্জিনের সরকার। দুর্নীতি ছাড়া আর কিছু করেনি।’ বিজেপি ও এনপিপি’র অপশাসন থেকে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসই মুক্তি দিতে পারে বলে দাবি করে ঘাসফুল শিবিরের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা বলেন, ‘সময় যত গড়াচ্ছে মেঘালয়ে ততই শক্তিশালী হয়ে উঠছে তৃণমূল। উই কার্ড’ ইতিমধ্যেই সাড়ে তিন লাখরেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে। গত দু’সপ্তাহে প্রায় ২ লাখ রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে৷ আমরা এখানে সরকার গঠন করবই। মেঘালয়কে শাসন করবে মেঘালয়ের ভূমিপুত্র। বাইরের কেউ নয়। গুয়াহাটি থেকে মেঘালয় পরিচালিত হবে না।’
তৃণমূলকে ভয় পেয়ে বিজেপি সিবিআই-ইডির মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তুলে অভিষেক বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসকে আটকাতে সবরকম শক্তি ব্যবহার করছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে একটা কথা স্পষ্ট করে বলে রাখছি, বিজেপি বিরোধী অন্য দলগুলি মাথা নত করলেও তৃণমূল মাথা উঁচু করে লড়াই করে যাচ্ছে। মাথা উঁচু করে লড়াই চালিয়ে যাবে। মেঘালয়ের মানুষকে বিজেপি-এনপিপি’র অপশাসন থেকে মুক্ত করতে শেষ বিন্দু দিয়ে লড়বেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা।’
