মেঘালয় বিধানসভা ভোটের জন্য ইস্তেহার প্রকাশ তৃণমূল কংগ্রেসের পাঁচ বছরে তিন লক্ষ চাকরি, পড়ুয়াদের ল্যাপটপ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি রাজ্য মেঘালয়ের মানুষের মন জয়ে দশ অঙ্গীকার করল তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার রাজ্যের বিধানসভা ভোটের জন্য প্রকাশিত দলীয় ইস্তেহারে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পাঁচ বছরে যেমন পাঁচ লক্ষ কর্মপ্রার্থীর কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তেমনই পড়ুয়াদের পড়াশোনার সুবিধার জন্য এক লক্ষ ল্যাপটপ বিলিরও আশ্বাস দেওয়া দেওয়া হয়েছে। বাংলার মতো যেমন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চালু হবে, তেমনই ২২ থেকে ৪০ বছর বয়সী বেকার যুবক-যুবতীদের মাসিক এক হাজার টাকা করে বিশেষ ভাতা দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘এটা শুধু তৃণমূলের প্রতিশ্রুতি নয়। প্রতিজ্ঞা। যা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে পালন করবে তৃণমূল।’ বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের বহিরাগত হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন তারা এখনও ইস্তেহার প্রকাশ করতে পারেননি। আমরা চারদিনের মাথায় ইস্তেহার প্রকাশ করে বুঝিয়ে দিলাম, মেঘালয়ের মানুষের কথা কতটা ভাবে তৃণমূল কংগ্রেস।’
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি মেঘের রাজ্যে বিধানসভার ভোট। আর ওই ভোটে সরকার গঠনের জন্য কোমর কষে ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। এদিন শিলংয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা সহ দলের রাজ্য নেতৃত্বকে পাশে নিয়ে ইস্তেহার প্রকাশ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘাসফুল শিবিরের ইস্তেহারে কৃষি থেকে শিল্প, শিক্ষা থেকে কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য থেকে মহিলাদের ক্ষমতায়ন-সব ক্ষেত্রেই জোর দেওয়া হয়েছে। ইস্তেহার প্রকাশ করে তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড বলেন, ‘মেঘালয়ের উন্নয়নে কোনও পদক্ষেপ করেনি বিজেপি সরকার। রাজ্যের শিক্ষা-স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হবে। পর্যটনের উন্নয়নে বিশেষ নজর দেওয়া হবে। মানুষের সমর্থন ছাড়া কোনও সিদ্ধান্ত তৃণমূল সরকার নেবে না। জনজীবন ও প্রাকৃতিক সম্পদের কোনও ক্ষতি করা হবে না। ইস্তেহারে যে দশ অঙ্গীকার করা হয়েছে তা ক্ষমতায় আসার ১০০ দিনের মধ্যেই পূরণ করা হবে।’
কী –কী রয়েছে তৃণমূলের দশ অঙ্গীকারে-
১) রাজ্যের এক লক্ষ পড়ুয়াকে বিনামূল্যে ল্যাপটপ দেওয়া হবে।
২) ২১ থেকে ৪৪ বছর বয়সী বেকার যুবক-যুবতীদের প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে বিশেষ ভাতা দেওয়া হবে।
৩) মহিলাদেরও প্রতি মাসে উই কার্ডের মাধ্যমে এক হাজার টাকা করে আর্থিক ভাতা দেওয়া হবে। মেঘালয় ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশনের অধীনে নারী ক্ষমতায়ন প্রকল্পে মহিলাদের রোজগারের ব্যবস্থা করা।
৪) আগামী পাঁচ বছর ধরে প্রতি বছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে চার হাজার করে ইউনিট করা হবে।
৫) পাঁচ বছরে তিন লক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
৬) কৃষকদের প্রতি বছর ১০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে।
৭) মাসিক সামাজিক কল্যাণ পেনশনে ১০০০ টাকা বৃদ্ধি এবং বিধবা এবং প্রবীণ নাগরিকদের দ্বিগুণআর্থিক সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি।
৮) প্রতিটি ব্লকে মাতৃ ও শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র, মেঘালয় স্বাস্থ্যবিমার অধীনে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত কভারেজ, নতুন মেডিকেল কলেজ স্থাপন।
৯) বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ট্রাফিক সমস্যা কাটাতে বিশেষ ব্যবস্থার উপরে জোর দেওয়া হবে। শিলং রিং রোড প্রকল্প বাস্তবায়িত করা।
১০) গারো ভাষাকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে।