অমরাবতী, ৬ জানুয়ারি: চন্দ্রযানের সফলতার পর ফের সূর্যমিশনে ইতিহাস গড়ল ভারত। শনিবার, ৬ জানুয়ারি ছিল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। নতুন বছরের শুরুতেই ফের সাফল্যের মুকুট মাথায় পড়ল ইসরো। শনিবার সূর্যমিশন আদিত্য-এল-১ চূড়ান্ত কক্ষপথে প্রবেশ করল। বিকেল ৪.২৫ মিনিটে ট্যুইট করে এই তথ্য জানায় ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। এক্স হ্যান্ডেলে ইসরো জানায়, ‘ভারত পেরেছে। আদিত্য-এল-১ সফলভাবে এল-১ পয়েন্টের চারপাশে হ্যালো কক্ষপথে প্রবেশ করেছে।’
ইসরোর বিজ্ঞানীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘ভারত আরও একটি ল্যান্ডমার্ক তৈরি করল। ভারতের প্রথম সৌর মানমন্দির আদিত্য-এল১ তার গন্তব্যে পৌঁছেছে। আমাদের বিজ্ঞানীদের নিরলস উৎসর্গের এটি একটি প্রমাণ। আমি দেশবাসীর সঙ্গে আজকের এই খুশির মুহূর্ত ভাগ করে নিচ্ছি। আমরা মানবতার কল্যাণে বিজ্ঞানের এই অগ্রগতিকে ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে নিয়ে যাব’।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর ইসরোর শ্রীহরিকোটার লঞ্চপ্যাড থেকে রওনা দেয় সৌরযান আদিত্য-এল-১। দীর্ঘ ১৫ লক্ষ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে মহাকাশযানটি। আদিত্য এল-১ মহাকাশে ভ্রমণের ১২৬ দিন পূর্ণ করেছে। আগামী ৫ বছরের জন্য সৌরজগৎ নিয়ে তার পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাবে। ৪০০ কোটি ব্যয়ে নির্মিত, প্রায় ১৫০০ কেজি স্যাটেলাইটটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে সূর্যের গতিবিধি লক্ষ্য করবে। এই সূর্যযানটি প্রথম মহাকাশ-ভিত্তিক ভারতীয় মানমন্দির হিসাবে কাজ করবে। মহাকাশযানটির চূড়ান্ত সন্নিবেশটি একটি সুবিধাজনক অবস্থানের জন্য একটি বাধাহীন জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে। এই জায়গা থেকে নিরন্তর সূর্যের উপর নজর রাখা যাবে, গ্রহণ কখনওই বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।
ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ বলেছেন, “সূর্যের প্রতি সারাক্ষণ দৃষ্টি রাখবে আদিত্য এল ১। তাই সূর্যের তড়িত-চৌম্বক প্রভাব সম্পর্কে হুঁশিয়ারি দিতে পারবে যা আমাদের কৃত্রিম উপগ্রহ এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক ও যোগাযোগের মাধ্যমকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ৫০টি কর্মক্ষম কৃত্রিম উপগ্রহ সহ মহাকাশে ভারতের ৫০,০০০ কোটি টাকার সম্পত্তি আছে। সূর্যের রোষ থেকে তাদের নিরাপদে রাখা প্রয়োজন। সূর্যের সবচেয়ে রহস্যময় স্তর ‘সোলার করোনা’ নিয়েই পর্যবেক্ষণ পাঠাবে আদিত্য এল-১। সূর্যের বহিস্তরের তাপমাত্রা প্রায় ১ কোটি কেলভিন, নিম্নস্তরের প্রায় ৬০০০ কেলভিন। সূর্যের পৃষ্ঠদেশে ও করোনার তাপমাত্রার ফারাক এবং করোনা থেকে ছিটকে আসা আগুনে রশ্মি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কীভাবে প্রভাব ফেলে সেটাই খুঁজে বার করবে আদিত্য এল-১।
