বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ শর্তসাপেক্ষে মমতার সংহতি মিছিলে অনুমতি দিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি কোন উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখা যাবেনা বলে জানিয়েছে আদালত। আগামী ২২ জানুয়ারি রামমন্দির উদ্বোধনের দিনই তৃণমূলের ‘সংহতি মিছিল’ হবে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর করা মামলায় জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। তবে কিছু শর্তও বেঁধে দিল আদালত। কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করবে, মিছিল থেকে এমন কোনও মন্তব্য করা যাবে না বলে বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন কে অটুট রাখতে সংহতি মিছিলের আহবান জানিয়েছেন । আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় মোদীর রামমন্দির উদ্বোধনের দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে ‘সংহতি মিছিল’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। সেই কর্মসূচি পিছনোর আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের মিছিল পিছনোর পাশাপাশি রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ২২ তারিখ রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আর্জিও আদালতে জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা।কলকাতা হাইকোর্টে শুভেন্দুর আইনজীবী জানিয়েছেন , -‘ এর আগেও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়েছে। রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিন যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে,তা নিশ্চত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক’। একই কারণ দর্শিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচিও পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ শর্তসাপেক্ষে মমতার সংহতি মিছিলে অনুমতি দিল। তবে মিছিল করার আগে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখার কথা বলা হয়েছে।এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারতি টি এস শিবজ্ঞানম জানিয়েছেন , -‘ সংহতি যাত্রা চলাকালীন কোনও বক্তব্যে ধর্মীয় আবেগে আঘাত করা চলবে না’। রায় দিতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই ধরনের র্যালির ক্ষেত্রে ট্রাফিকের সমস্যা হতে পারে, আটকে পড়তে পারে অ্যাম্বুল্যান্স। এই বিষয়গুলি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দল ও রাজ্য সরকারকে তত্পর হতে হবে বলে উল্লেখ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মমতা জানান , ”ওই দিন হাজরা থেকে পার্কসার্কাস পর্যন্ত সংহতি মিছিল করা হবে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে সর্বধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই কর্মসূচি করব।” এই মিছিল পিছনোর আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যান বিরোধী দলনেতা। কিন্তু, এদিন সেই আর্জি খারিজ করে মিছিলের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত আরও জানায়, -‘ ওইদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে মিছিল করতে হবে শাসক দলকে। হাজরার মোড় থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত নিরপত্তার দায়িত্বে থাকবে কলকাতা পুলিশ’। ওইদিন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের যে আর্জি বিজেপি’র তরফে জানানো হয়েছিল, তাও বৃহস্পতিবার খারিজ করে দেয় আদালত। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়,-‘ এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই’। সেই সঙ্গেই আদালতের নির্দেশ, -‘কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে, মিছিল থেকে এমন কোনও মন্তব্য করা যাবে না’।
