সন্দেশখালির শাহজাহান মামলায় ১১৩ পাতার চার্জশিট পেশ ইডির

লোকসভা নির্বাচন আবহে সোমবার ইডি এজলাসে কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডি সন্দেশখালি মামলায় ৫৬ দিনের মাথায় চার্জশিট দাখিল করলো। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, -‘জমি দখল করে প্রায় ২৬১ কোটি টাকার সম্পত্তি নিজের নামে করেছিলেন শাহজাহান’। সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে প্রথম চার্জশিট জমা দিল ইডি। জমি দখল সংক্রান্ত মামলায় এই চার্জশিট পেশ করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শাহজাহানের গ্রেফতারির ৫৬ দিনের মাথায় সোমবার কলকাতায় বিশেষ ইডি আদালতে জমা পড়ল চার্জশিট। ১১৩ পাতার ওই চার্জশিটে শাহজাহান ছাড়াও নাম রয়েছে শাহজাহানের ভাই আলমগির এবং তাঁর দুই ‘সঙ্গী’ দিদার বক্স ও শিবু হাজরার।কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গেছে , সন্দেশখালিতে জমি দখল সংক্রান্ত বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে ইডির অফিসারদের কাছে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরু থেকেই ঘটনা প্রবাহে সংবাদ শিরোনামে সন্দেশখালি। মুখ খুলেছেন সন্দেশখালির মানুষরা। জানিয়েছেন তাঁদের অভিযোগের কথা। উঠে এসেছে জমি দখল সংক্রান্ত বিস্তর অভিযোগ। জমি দখল সংক্রান্ত ওই অভিযোগগুলির তদন্ত শুরু করেছিল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে প্রকাশ , অফিসাররা এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছেন প্রায় ১৮০ বিঘা জমি শাহজাহান দখল করেছিলেন এবং সেখান থেকে ২৬১ কোটিরও বেশি টাকা নিজের পকেটে পুড়েছিল বলে সন্দেহ ইডির। এর মধ্যে ইতিমধ্যেই ২৭ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করতে সক্ষম হয়েছে ইডি। এই যাবতীয় বিষয়টি ইডির জমা দেওয়া চার্জশিটে উল্লেখ করা রয়েছে বলে সূত্রের জানা গেছে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে , -‘ এই চার্জশিটে এমন কিছু তথ্য রয়েছে, যা পরবর্তীতে শেখ শাহাজাহানের জামিন পাওয়ার রাস্তা আরও কঠিন করে তুলতে পারে’।সোমবার আদালতে ইডির আইনজীবী জানান, -‘ তদন্তের ৫৬ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা পড়ল। অভিযুক্ত চারজনের বিরুদ্ধে জমি দখল এবং তোলাবাজির মাধ্যমে সম্পত্তি করার অভিযোগ রয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ২৬১ কোটি টাকার সম্পত্তি চিহ্নিত করা হয়েছে’। চার্জশিটে আরও দাবি করা হয়েছে, -‘প্রায় ১৮০ বিঘা জমি দখল করেছেন শাহজাহান। তবে তার পরিমাণ বাড়তে পারে’।১১৩ পাতার চার্জশিটে যুক্ত হয়েছে শাহজাহানের ভাই আলমগিরের নামও। এছাড়াও দিদার বক্সার মোল্লা, শিবপ্রসাদ হাজরার নাম রয়েছে অভিযুক্তের তালিকায়। সন্দেশখালিতে তল্লাশি চালিয়ে সিবিআই যে অস্ত্র উদ্ধার করেছিল সেটারও উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে।উল্লেখ্য, মার্চ মাসের গোড়ায় শাহজাহান এবং তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত ১২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। তার পর আবার মে মাসে দ্বিতীয় দফায় তাঁর স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি আটক করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ।গত ১৭ মে ইডির তরফে জানানো হয়, শাহজাহানের ১৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তিন কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা আটক করা হয়েছে। একইসঙ্গে, ৫৫টি স্থাবর সম্পত্তি, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, সেটাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।বর্তমানে শেখ শাহজাহান প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন।সন্দেশখালি ঘটনায় একযোগে সিবিআই – ইডি তদন্ত চালাচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টের নজরদারিতে।