বাংলা নিয়ে ‘কুৎসার ঝুলি’ রয়েছে ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্টবেঙ্গল’-এ দাবি করেছেন কুণাল ঘোষ। ওই ছবির প্রসঙ্গে কলকাতার সিনেমাপাড়ার কলাকুশলীদের একহাত নিলেন ওই তৃণমূল নেতা । টালিগঞ্জের কিছু শিল্পীকে পরোক্ষে সুবিধাবাদী বললেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, প্রয়োজনের সময়ে ওই শিল্পীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে পড়েন , হাত নেড়ে ছবি তোলেন। কিন্তু শাসকদলের দুঃসময়ে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায় না। এ প্রসঙ্গে মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দৃষ্টান্তও টেনেছেন কুণাল। ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এর পাল্টা কিছু টালিগঞ্জ থেকে কেন তৈরি করা হবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।সনোজকুমারের ছবিটি নিয়ে মূল অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের ভাবমূর্তি খারাপ করার উদ্দেশ্যে ওই ছবি তৈরি করা হয়েছে। রয়েছে ঘৃণা ও বিদ্বেষ । কুণালও সে কথাই বলেছেন। শুক্রবার সকালে তিনি বলেছেন, ‘‘মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বহু পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা এমন কিছু রাজনৈতিক ছবি তৈরি করেন, যা সমাজে বিজেপির পক্ষে ন্যারেটিভ গড়ে তোলে।
ঘোষণার পর থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে এই ছবি। কিন্তু সব বিতর্ক পেরিয়ে শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে সনোজ মিশ্র পরিচালিত এই ছবি। এই ছবির মুক্তি রুখলে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা পর্যন্ত হয়েছিল। ‘রাজ্যের মানুষ অনেক সহনশীল’, এই কথা জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ছবির মুক্তি আটকাতে কোনওরকম পদক্ষেপ নেয়নি। দেশের অনান্য রাজ্যে মুক্তি পেলেও পশ্চিমবঙ্গে ৩০শে অগস্ট মুক্তি পেল না এই বিতর্কিত ছবি।
পশ্চিমবঙ্গে এই ছবির মুক্তি আটকায়নি রাজ্য সরকার, বরং নির্মাতারাই বাংলায় এই ছবি রিলিজ করেননি। জানিয়েছেন প্রযোজক রানা সরকার ।
ফেসবুকে পোস্টে রানা লেখেন, ‘The Diary of West Bengal নামে যে সিনেমাটি রিলিজ করেছে সেটা নিয়ে কারও কোন উৎসাহ নেই। আমরা সবাই জানি এটা আদ্যপান্ত একটা প্রোপাগান্ডা ফিল্ম, দেশের মানুষের চোখে পশ্চিমবঙ্গের একটা বিভ্রান্তমূলক চিত্র দেখানোর চেষ্টা। ধর্মীয় মেরুকরণ ও রাজনীতি নিয়ে আদ্যপান্ত একটা উদ্দেশ্যমূলক প্রয়াস’।
রানা তাঁর পোস্টে আরও লেখেন, ‘লক্ষ্যনীয় যে প্রযোজক নির্মাতারা সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন এই সিনেমাটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করতে। তারা এই খবর রটিয়েছিল যে সিনেমাটির পরিচালক সনজ মিশ্র কলকাতায় আসার পর নিঁখোজ। তাঁকে নাকি প্রচুর হুমকি দেওয়া হয়েছিল যার কোন ভিত্তি ছিল না, তারপর তাঁকে বারাণসী তে পাওয়া যায়। কিন্তু মেনস্ট্রিম মিডিয়া এই বিষয়ে কোন উৎসাহ দেখায়নি বলে বিতর্ক তৈরি করতে তারা ব্যর্থ। কলকাতা হাইকোর্ট সিনেমাটি রিলিজ বন্ধ করার বিষয়ে কোন হস্তক্ষেপ করেনি। সিনেমাটি সারা দেশে রিলিজ করা হল কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে কোনও হলে রিলিজ করা হয়নি। না, কোন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে সিনেমাটি পশ্চিমবঙ্গে রিলিজ হল না এরকম নয়। প্রযোজক নির্মাতারা নিজেরাই এই সিনেমাটি পশ্চিমবঙ্গে রিলিজ করলেন না। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, এই সিনেমাটি উদ্দেশ্য মূলক । ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্যেই এর নির্মাণ। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর মিথ্যা দোষারোপ করা হয়েছে ।
