বন্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী, বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে যা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বিভিন্ন দফতরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক, সচিব, স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদদের নিয়ে বন‍্যা পরবর্তী কর্ম ও কর্তব্য নির্দেশনা দিলেন মুখ‍্যমন্ত্রী। বোলপুরে গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে দীর্ঘ বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে মুখ‍্যমন্ত্রী জানান, দুর্গা, কালী, নবরাত্রী, ছট পুজো, উৎসব মিটলে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক তিনি করবেন। কিন্তু এখন তিনি এসেছেন বর্তমান উদ্ভূত বন‍্যা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করতে। মন্ত্রীরা আগে গেছেন, মুখ‍্যসচিব গেছেন।

ধন্যবাদ, এখানে জেলা শাসক, অসিত মাল, রাণা নিজে গেছেন নৌকায় করে। কোনরকমে প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন। তবে বলবো নৌকায় বা স্পিডবোটে কতজন যেতে পারে সেই সংখ‍্যাটা মাথায় রাখতে হবে। তার সঙ্গে ত্রাণ থাকে। তারও একটা ওজন আছে। চিকিৎসকদের আন্দোলন চলাকালীন বিনা চিকিৎসায় উনত্রিশ মারা গেছেন। তাদের পরিবার পিছু দুই লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ‍্যমন্ত্রী। মৃত পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন তিনি।

মুখ‍্যমন্ত্রী বলেন, ত্রাণের পাশাপাশি, পুলিশ থেকে কিচেন, এডমেনিসট্রেটিভ থেকে কিচেন এবং পঞ্চায়েত স্তরেও কিচেন খোলা হয়। আমি আমার দলের তরফ থেকেও ড্রাই ফুড প‍্যাকেট দেওয়ার ব‍্যবস্থা করি।
বন‍্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সব জায়গার নাম এই মুহূর্তে না বলতে পারলেও আমি জানি, সিউড়ী, দুবরাজপুর, রামপুরহাট, সাঁইথিয়া, লাভপুরে বন‍্যা হয়েছে। আগামী দু’দিনে ফের ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। কারণ বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে।

মুখ‍্যমন্ত্রী বলেন, এদিন বৈঠকে আমি এম এল এ এবং এমপি দের ইন্স্ট্রাকশন দিয়েছি গ্রামীন যে রাস্তাগুলো বন‍্যায় ভেঙেছে সেগুলো তাদের টাকার সম্পূর্ণ গ্রামীন রাস্তার জন‍্য ব‍্যায় করতে। এমপিদের বলেছি তারা ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীন রাস্তার জন‍্য তাদের ল‍্যাড থেকে চার কোটি এবং ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল বিল্ডিংয়ের জন‍্য এক কোটি অর্থ ব‍্যায় করবেন। বাদ বাকি পঞ্চায়েত সার্ভে করে দেখে নেব।

তিনি বলেন, আমরা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে এগারো লক্ষ বাড়ি ছাড়বো। যদিও কেন্দ্র তিন বছর ধরে আবাসের কোনো টাকা আমাদের দেয় নি। এছাড়াও এক লক্ষ সত্তর হাজার টাকা আমরা পাই। ইতিমধ্যে সংখ‍্যালঘু দফতর থেকে দুস্থ মহিলাদের জন‍্য পঁয়ষট্টি হাজার বাড়ি বিলি বন্দোবস্ত হয়েছে। তেরো বছরে পঞ্চাশ লক্ষ বাড়ি দেওয়া হয়েছে। সংখ‍্যাটা কম নয়। কারণ শহরের থেকে গ্রামের সংখ্যা অনেক বেশি। এখনও পঞ্চাশ লক্ষ মাটির বাড়ি বাকি আছে। দেড় লক্ষ ঘর বন‍্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। নতুন এলোটমেন্ট এবং মাইনরিটি ডিপার্টমেন্টের এলোটমেন্ট থেকে সেটা দেখে নিতে হবে। রাস্তার ব‍্যাপার পি ডব্লিউ ডি, পানীয় জলের ব‍্যাপারটা পি এইচ ই এবং পাওয়ারের ব‍্যাপারটা দেখে নেবেন। কারণ জল না সরলে সে সব জায়গাই বিদ‍্যুৎ চালু করা যাবে না। এই বীরভূমের মাটিতে আমার জন্ম। আমি জানি, আগে এই রাস্তা কিছুই ছিল না।