উত্তরপ্রদেশ: উপ-নির্বাচনে কুন্দারকিতে বিজেপির জয়ে অখিলেশের বড় অভিযোগ, “ভোট কারা দিলেন?”

উত্তরপ্রদেশের সাম্প্রতিক উপ-নির্বাচনে জালিয়াতি, কারচুপি ও দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব ও এই দলের কুন্দারকি এলাকার প্রার্থী হাজি রিজওয়ান। তাঁদের আরও অভিযোগ, প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে এবং ভোটারদের মত-প্রকাশে বাধা দেওয়া হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অখিলেশ যাদব দাবি করেছেন, সমাজবাদী পার্টির সমর্থকদের পরিকল্পিত ভাবে ভোটদানে বাধা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, “ভোটের দিন অনেক ভিডিও ও প্রতিবেদন লাগাতার এসেছে। আমরা সেগুলি নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দিয়েছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মারফতে। একটা ভিডিওতে দেখেছি, কুন্দারকিতে আমাদের এক সমর্থক ভোট দিতে বুথে গিয়ে দেখেন সমাজবাদী পার্টির এজেন্টকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন চায়নি সমাজবাদী পার্টির কোনও এজেন্ট যেন না থাকেন বুথগুলিতে।”

অখিলেশ যাদব এই প্রক্রিয়ার সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, “সমাজবাদী পার্টির সমর্থকরা যেখানেই ভোট দিতে গিয়েছেন তাঁদের আটকানো হয়েছে। আমাদের ভোটাররা যদি বুথে পৌঁছতেই না পারেন তাহলে তাঁদের ভোটগুলি কে দিল? এটা গুরুতর প্রশ্ন।”

কুন্দারকি অঞ্চল থেকে সমাজবাদী পার্টির হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন হাজি রিজওয়ান। তাঁর গলায়ও অখিলেশ যাদবের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি। তাঁর অভিযোগ, ভোটে কারচুপি করা হয়েছে। রিজওয়ান বলেছেন, “ব্যাপক হারে জালিয়াতি করা হয়েছে। ৯০ শতাংশ লোকের আঙুলে কালির দাগই নেই। প্রশাসন প্রবল বাধা দিয়েছে এবং ভোটকে প্রভাবিত করতে বহিরাগতদের এনেছে। ভোট যদি সততার সঙ্গে হত তাহলে আমি এক লাখ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতাম।” তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেছেন। তাঁর দাবি, পুলিশ সমাজবাদী পার্টির ভোটারদের বাধা দিয়েছে। তিনি আরও যোগ করেন, “এসওজি দল আচমকা হাজির হয় এবং লোকজনকে তারা ভিন্ন ভিন্ন থানায় নিয়ে যায়।”

ভোট প্রক্রিয়ার অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অখিলেশ যাদব। তাঁর অভিযোগ, কিছু বুথে দুটি আলাদা ভোটিং স্লিপ দেওয়া হয়েছে। একটা স্বাভাবিক ও অন্যটা লাল কালি দেওয়া। তিনি দাবি করেছেন, “আজ কুন্দারকি থেকে লোকেরা এগিয়ে এসে জানাচ্ছেন কীভাবে তাঁদের ভোটদানে বাধা দেওয়া হয়েছে। একই রকম ঘটনা ঘটেছে সীতাপুরে। প্রশাসনের অভিপ্রায় স্পষ্ট—এসপি ভোটাররা যাতে বুথে পৌঁছতে না পারেন, সেটাই তাদের লক্ষ্য।”

উল্লেখ্য, বিজেপির রামবীর ঠাকুর কুন্দারকি থেকে জিতে রেকর্ড তৈরি করেছেন। তিরিশ বছর পর এই এলাকা থেকে বিজেপির কোনও প্রার্থী বিধানসভা আসনে জয়ী হলেন। মজার বিষয় হল, তিনি ১৭০৫৬৫ ভোটে কুন্দারকি থেকে জিতেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন ১১ জন মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতা। এঁরা হলেন, সমাজবাদী পার্টির হাজি রিজওয়ান, আজাদ সমাজ পার্টির চাঁদ বাবু, অল ইন্ডিয়া মজলিশে ইত্তেহাদুল মুসলেমিনের মহম্মদ বারিশ ও বহুজন সমাজ পার্টির রাফাতুল্লাহ প্রমুখ।