পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের মতো করেই মেঘালয়েও দশটি অঙ্গীকারকে সামনে রেখে বিধানসভা ভোটের জন্য ঝাঁপাতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে একটা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই এই ইসের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য অঙ্গীকার পত্র প্রকাশ করলেন তিনি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে যেমন দশটি প্রধান ইস্যুকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেস লড়াই করেছে এখানেও রাজ্যের শাসকদলের মূল ভরসা সেই দশটি অঙ্গীকার।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে অভিষেক বলেন, নির্বাচনের আগে ভোটপাখি হয়ে আপনাদের রাজ্যে ভোট চাইতে আসছে না তৃণমূল। কেউ কেউ আমাদের বলেন বহিরাগত। কিন্তু গত এক দেড় বছর আপনাদের পাশে থেকে মানুষের দাবী দাওয়া নিয়ে লড়াই করেছি। সেই লড়াইয়ের ভিত্তিতে আপনাদের দরজায় যাচ্ছি আমরা। নির্বাচনের সময় আসা তারপর নির্বাচন চলে গেলে ভুলে যাওয়া এমন ইতিহাস তৃণমূল কংগ্রেসের নেই। তিনি আরো বলেন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক দলগুলিকে দেখা যায় নির্বাচনের সময় যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা বাস্তবে রাখে না। তৃণমূল সেই রকম দল নয় আর সে কারণেই মেঘালয়ের মানুষকে কোন প্রতিশ্রুতি দিতে চাইছি না আমরা। বরং আমরা দলের ইশতেহারকে অঙ্গীকার পত্র লিখছি একটাই কারণে। আমরা এই দশ অঙ্গীকার নিয়ে মানুষের দরজায় যাচ্ছি। নির্বাচনে জেতার পর এই অঙ্গীকার পূরণই হবে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের প্রধান কাজ।
এদিন রাজ্যের শাসকদলের তরফে যে ১০ অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে, সেখানে কি বলা হয়েছে একবার দেখে নেওয়া যাক।
প্রথম অঙ্গীকারে তৃণমূলের তরফ থেকে বলা হয়েছে, মেঘালয়ের অর্থনীতির হাল ফেরানোই মেঘের দেশে তৃণমূলের প্রথম অঙ্গীকার। এক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে বলা হয়েছে আগামী পাঁচ বছরের মেঘালয়ের অর্থনীতিকে ডবল ডিজিট ইকোনমিতে পৌঁছে দেওয়াই তাদের লক্ষ্য। এক্ষেত্রে ক্ষমতায় এলে প্রতিবছরে চার হাজার নতুন ক্ষুদ্র মাছারি এবং কুটির শিল্প স্থাপন করা হবে। একইসঙ্গে সেখানে খনিজ সম্পদের ভান্ডার রয়েছে তাকে বিজ্ঞানসম্মত এবং লাভজনক উপায়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে
দ্বিতীয় অঙ্গীকরে বলা হয়েছে, মেঘালয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিতকরণ। এর মধ্যে মাইকার্ড এবং উই কার্ডের মতো বিষয়গুলি রয়েছে। এক্ষেত্রে তৃণমূলের লক্ষ্য আগামী পাঁচ বছরের ৩ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। এখানেই শেষ নয় তৃণমূল চাইছে ক্ষমতায় আসলে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়াদের ১ লক্ষ ল্যাপটপ দেওয়া হবে।
তৃতীয় ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিশ্রতি উইমেন এমপাওয়ারমেন্টস স্কিম। এই স্কিমের আওতায় প্রত্যেক পরিবারের মহিলাদের ১০০০ টাকা করে মাসে সরাসরি ব্যাংক ট্রান্সফারের কথা বলেছে তৃণমূল।
চতুর্থ অঙ্গীকার সকলের জন্য সোশ্যাল সিকিউরিটি স্কিম। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাতা প্রাপকরা আগামীদিনে এক হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা এখানে বলা হয়েছে।
এছাড়াও এই অঙ্গীকার পত্রের কৃষক স্বার্থের কথা যেমন বলা হয়েছে একইভাবে হাসপাতাল সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিকাঠামো উন্নয়নের কোথাও বলা হয়েছে। তৃণমূলের তরফ থেকে এদিন প্রকাশ করার ইজতেহারে বাড়তি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে মেঘালয়ের সাংস্কৃতিক বিকাশ এবং নাগরিকের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের উপর। মোটের উপর এদিন মেঘালয় যে ইশতেহার প্রকাশ করা হয়েছে তার পেছনে রয়েছে বাংলার উন্নয়ন মডেল। এখন দেখার মেঘালয়ের মানুষ এই উন্নয়নের মডেলকে কতটা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গ্রহণ করে।
