নিজস্ব প্রতিবেদক: গুজরাতের মোরবীতে ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়া শতাধিক মানুষের সলিল সমাধি ঘটেছে। আর ওই মর্মান্তিক ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসল রাজ্য সরকার। উত্তরবঙ্গ সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ঝুলন্ত সেতুগুলি কী অবস্থায় রয়েছে, তা নিয়ে রাজ্যের পূর্ত দফতরের মুখ্য বাস্তুকারের কাছে রিপোর্ট তলব করলেন মুখ্যসচিব। আজ মঙ্গলবারের মধ্যেই ওই সেতুগুলির বর্তমান দশা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আজ বিকেলেই রাজ্যের বিভিন্ন সেতুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল-হকিকত জানতে দফতরের পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসছেন পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ আমলার কথায়, ‘যেহেতু সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট রয়েছে, তাই গুজরাতের মতো বিপর্যয় যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান কর্তব্য।’
গত রবিবার রাতে গুজরাতের মোরবীতে এক ঝুলন্ত সেতু ভেঙ্গে পড়ে শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ওই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। যদিও ওই দুর্ঘটনায় গুজরাতের বিজেপি সরকারের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। যে নির্মাণ সংস্থা ওই ভেঙে পড়া সেতু সংস্কারের কাজের দায়িত্বভার পেয়েছিল, তাদের কর্তাদের সঙ্গে পদ্ম শিবিরের শীর্ষ নেতাদের দহরম-মহরমের খবর প্রকাশ হয়েছে। গুজরাতের সেতু বিপর্যয়ের পরেই অবশ্য নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা।
অতীতে পোস্তা ও মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরেই কলকাতা সহ শহরতলীর বিভিন্ন সেতুগুলির স্বাস্থ্যপরীক্ষার কাজ শুরু করেছিল পূর্ত দফতর। বিভিন্ন সেতু বন্ধ রেখে নিয়মিতই স্বাস্থ্যপরীক্ষা হচ্ছে। কিন্তু ঝুলন্ত সেতুর ক্ষেত্রে নজরদারিতে কিছুটা হলেও গাফিলতি ছিল। নবান্ন সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি রাঢ় বঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া সহ একাধিক জেলায় বেশ কয়েকটি ঝুলন্ত সেতু রয়েছে। কোন জেলায় কত ঝুলন্ত সেতু রয়েছে, বর্তমানে সেই সেতুগুলির অবস্থা কেমন, তা জানতে চেয়ে পূর্ত দফতরের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই সেতুগুলির সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে রাজ্যের এক শীর্ষ আমলা জানিয়েছেন।
গুজরাতের মোরবীর ঘটনার পরেই রাজ্যের ঝুলন্ত সেতুগুলি নিয়ে দফতরের পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে আজ মঙ্গলবার জরুরি বৈঠকে বসছেন পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়। যদিও নবান্নের রিপোর্ট তলবের সঙ্গে আজকের বৈঠকের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক। যদিও সূত্রের খবর, রাজ্যের ঝুলন্ত সেতুগুলির অবিলম্বে সংস্কার করার কাজে কত পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, কোন-কোন সেতুকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সংস্কার করা হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই আজকের বৈঠক ডাকা হয়েছে।
