নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রাম বাংলা দখলের ভোটযুদ্ধের আগে জনমোহিনী নীতির পথেই হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার চেন্নাইয়ের উদ্দেশে রওনার নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন তিনি। ওই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বিধবা ভাতার প্রাপকরাও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি, কৃষকদের জন্যও বড়সড় মানবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চাষের জমির উপর দিয়ে এতদিন ৬৫ কেভির বেশি হাই টেনশন লাইন গেলে চাষীরা শুধু ফসলের ক্ষতিপূরণ পেতেন। এবার থেকে সমস্ত জায়গাতেই জমির ক্ষতিপূরণও পাবেন চাষীরা। দুই সিদ্ধান্তেই সায় দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
গত বিধানসভা ভোটের পরেই নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মেনে রাজ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের স্বপ্নের প্রকল্প স্কচ পুরস্কার ঝুলিতে পুরেছে। প্রকল্পে সাধারণ মহিলাদের ৫০০ টাকা এবং তফশিলি জাতি কিংবা উপজাতির মাসে হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সীরাই এই সুবিধা পান। তবে যাঁরা সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত কিংবা পেনশন পান তাঁরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পান না। এদিন সেই নীতিতে বদল করে বিধবাদের সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের শাসকদল ভোট বাক্সে তুলবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
পাশাপাশি দুয়ারে সরকার কর্মসূচি নিয়েও বড়সড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত পয়লা নভেম্বর মঙ্গলবার থেকেই রাজ্যে শুরু হয়েছে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। রাজ্য সরকারের ওই জনপ্রিয় কর্মসূচিতে ইতিমধ্যেই ব্যাপক ভিড় উপচে পড়ছে। এতদিন দুয়ারে সরকারে সরকারি বিভিন্ন সুবিধা মিলছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে এদিন বড়সড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্দেশ দিয়েছেন, ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে এখন থেকে শুধু পরিষেবাই মিলবে না। সেই সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিযোগও জানানো যাবে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের সরকারি কোনও পরিষেবা নিয়ে আপত্তি জানানো যাবে। আর অভিযোগ জমা নেওয়ার জন্য আলাদা কাউন্টার খোলা হচ্ছে।
সামনেই শীত। আর শীতে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন মেলার আয়োজন করে একাধিক সরকারি দফতর। আসন্ন শীতে যাতে অকারণে কোনও মেলার আয়োজন করা না হয়, সেই নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অকারণে খরচ না করে সেই টাকা ১০০ দিনের কাজে ব্যয় করার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। আর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই আজ বৃহস্পতিবার বিভিন্ন দফতরের সচিব ও জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। পাশাপাশি এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিভিন্ন দফতরে আরও ২৬১টি পদ তৈরির ক্ষেত্রেও অনুমোদন দেওয়া হয়।
