আজ ফের সুপ্রিম কোর্টে আরজিকর মামলার শুনানি, সিভিক ও স্বাস্থ্য নিয়ে হলফনামা দিল রাজ্য

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আরজিকর কান্ডে মামলার শুনানি নির্ধারিত ছিল। তবে তা পিছিয়ে যায় । শেষ মুহূর্তে এদিন আরজি করের শুনানি স্থগিত করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ। আজ অর্থাৎ বুধবার ১১টায় সুপ্রিম কোর্টে বসতে চলেছে আরজি কর মামলার শুনানি। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চেই রয়েছে শুনানির সম্ভাবনা।আদালত সূত্রে প্রকাশ , মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ভবনে ছিল একটি অনুষ্ঠান। সেখানে যোগ দেবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই এদিন কোর্ট থেকে উঠে যান তিনি। যার জেরে পিছিয়ে গেল এদিনকার শুনানি।উল্লেখ্য, গত ৯ অগাস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ঘটে যায় বীভৎস ঘটনা। রাতের অন্ধকারে কর্মরত ট্রেনি চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। ঘটনার তদন্তভার চলে যায় সিবিআইয়ের হাতে। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে।তারপর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজ্যের সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকেও। ১৫ অক্টোবর শীর্ষ আদালতে আরজি কর মামলার শুনানি চলাকালীন রাজ্যে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি।সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের পদ্ধতি, আইন মেনে আদৌ নিয়োগ হয়েছে কি না, নিয়োগের যোগ্যতার মাপকাঠি কী ইত্যাদি ব্যাপারে আগেই প্রশ্ন করেছিল শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, প্রধান বিচারপতি রাজ্যের কাছে এও জানতে চান, মাস শেষে কীভাবে বেতন দেওয়া হয় সিভিকদের? কোন প্রতিষ্ঠানে তাঁদের নিয়োগ করা হচ্ছে? আগে কারও বিরুদ্ধে অপরাধের ইতিহাস রয়েছে কি না?মঙ্গলবার শুনানির আগে হলফনামা আকারে এ ব্যাপারে পুঙ্খানপুঙ্খ তথ্য শীর্ষ আদালতে জমা দেয় রাজ্য। তবে সেই শুনানি এদিন পিছিয়ে যায়। আজ সকাল ১১টায় আরজি কর শুনানির পরবর্তী সময় দেওয়া হয়েছে।মঙ্গলবার সিভিক ভলান্টিয়ার সংক্রান্ত হলফনামা জমা দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে আরও দু’টি হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছে। একটি, কেন্দ্রীয় রেফার ব্যবস্থা। আর দ্বিতীয়টি হল আর একটি হল নিরাপত্তা পরিকাঠামো সংক্রান্ত ব্যবস্থা? অর্থাৎ এই রেফারেল সিস্টেমের কাজের পাশাপাশি নিরাপত্তা হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা পরিকাঠামোর কাজ কতদূর এগিয়েছে সেই সকল তথ্যই জমা দিল রাজ্য।সূত্রের খবর, হলফনামায় বলা হয়েছে রাজ‍্যের ২৮টি মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা পরিকাঠামো-সহ অন্য কাজে ১২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। ইতিমধ্যেই ডিউটি রুম তৈরির কাজ হয়েছে ৯৭ শতাংশ। শৌচাগার তৈরির কাজ হয়েছে ৯৫ শতাংশ।ডিউটি রুম তৈরির কাজ হয়েছে ৯৭ শতাংশ শৌচাগার তৈরির কাজ হয়েছে ৯৫ শতাংশ।আলোর পরিকাঠামো তৈরি ৯৫ শতাংশ।সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ ১০০ শতাংশ। হলফনামায় রাজ‍্য জানিয়েছে, আরজি করে ডিউটি রুমের কাজ ৫৬ শতাংশ।শৌচাগার তৈরির কাজ ৫২ শতাংশ।পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা ১০০ শতাংশ।সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ ১০০ শতাংশ।এছাড়াও, রাজ‍্যের ২৮টি মেডিক্যাল কলেজে প‍্যানিক বটন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।১,০৬৫টি বায়োমেট্রিক অ্যাকসেস কন্ট্রোল ডিভাইসের মধ‍্যে ৬৫৬টি বসানো হয়েছে।এই কাজে ২.২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য।গত ১৫ অক্টোবর থেকে ডায়মন্ড হারবার-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কেন্দ্রীয় রেফার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। সারা রাজ্যে এই ব্যবস্থা চালুর জন‍্য ৩০ অক্টোবর সবকটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ-এমএসভিপি’র সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।এরপর নভেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে ৮ জেলায় চালু হয়েছে কেন্দ্রীয় রেফার ব‍্যবস্থা।রাজ‍্যের ২৮টি মেডিক্যাল কলেজে অতিরিক্ত ৯,৫১৪ জন নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। ৯,৫১৪ জনের মধ‍্যে ৫০৪ জন মহিলা নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন বলে জানিয়েছে রাজ্য।